শিয়াল আর ছাগল এর গল্প

বন্ধুরা, তোমরা নিশ্চয়ই জানো যে, পশুদের মধ্যে শিয়ালকে সবচেয়ে চালাক মনে করা হয়। আর ছাগলকে বলা হয় সবচেয়ে বোকা। একদিন এক শিয়াল একটা কূয়োর মধ্যে পড়ে গেল। অনেক চেষ্টা করেও সে সেই কূয়োটা থেকে উঠে আসতে পারল না। এদিকে একটা ছাগলের ওই সময় খুব পিপাসা পেল। ছাগলটি ঘুরতে ঘুরতে কূয়োর পাশে এসে হাজির হল।

কূয়োর মধ্যে শিয়ালকে দেখে সে জানতে চাইল যে, কূয়োর খাওয়ার মতো পানি আছে কিনা। শিয়ালতখন নিজের দুরবস্থা চেপে গিয়ে এক গাল হাসিতে মুখ ভরিয়ে নানাভাবে সেই কূপের পানির প্রচুরপ্রশংসা করল। বলল- “এই কূয়োর পানি এত সুমিষ্ট যে আশপাশের কোথাও এমন পানি পাবে না।তুমি নীচে নেমে এসে প্রাণভরে পানি খাও, কেউ তোমাকে কিছু বলবে না।”

শিয়ালের মিষ্টি কথায় আর দেরি না করে ছাগল কূয়োর ভিতর লাফিয়ে পড়ল। পেটপুরে পানি খাওয়ার পর শিয়ালকে ধন্যবাদ দিল। এসময় শিয়াল তাকে জানাল-  ভয়ানক অবস্থায় তারা আটকা পড়েছে। এই ঝামেলা থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য ছাগলের কাছে সে একটা প্রস্তাব রাখল। বলল, “তুমি যদিতোমার সামনের পা দুটো তুলে কূয়োর দেয়ালে ভর দিয়ে খাড়া হয়ে দাঁড়াও আর তোমার মাথাটা নিচুকরে রাখ, আমি তাহলে তোমার পিঠের উপর দিয়ে দৌড়ে কূয়োর বাইরে চলে যাব। আমি একবার বের হতে পারলে তোমাকেও তখন উদ্ধার পেতে সাহায্য করতে পারব।”

ছাগল কোনো ভাবনা-চিন্তা না করে সঙ্গে সঙ্গে শিয়ালের প্রস্তাবমত দাঁড়িয়ে গেল। শিয়াল লাফ দিয়েছাগলের পিঠে চড়ল। তার শিং ধরে নিজেকে সোজা করল। তারপর নিরাপদে কূয়োর বাইরে এসেই একটুও দেরি না করে সেখান থেকে পালিয়ে যাওয়ার জন্য দৌড় দিল। ছাগল যখন এতে তাকে শর্তভঙ্গের জন্য অভিযুক্ত করল, শিয়াল ঘুরে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলল “ওরে বুদ্ধু! তোর শরীরে যত চুল, তোর মাথায় যদি সেই পরিমাণ বুদ্ধি থাকত তা হলে উপরে ওঠার পথ ঠিক না করে তুই নীচে ঝাঁপিয়ে পড়তি না। যেই বিপদ থেকে রেহাই পাওয়ার কোনো উপায় তোর জানা নেই, সেই বিপদের দিকে নিজেই নিজেকে এইভাবে ঠেলে দিতিস না।”

এ গল্পের শিক্ষণীয় হচ্ছে, যেকোনো কাজ করার আগে দেখেশুনে পা ফেলা উচিত। শয়তানের চরিত্র জানা থাকা সত্ত্বেও যে তাকে বিশ্বাস করে তার ধ্বংস হওয়াটাই স্বাভাবিক।

এসেছে নতুন শিশু, তাকে ছেড়ে দিতে হবে স্থান; জীর্ণ পৃথিবীতে ব্যর্থ, মৃত আর ধ্বংসস্তূপ-পিঠে। চলে যেতে হবে আমাদের। চলে যাব- তবু আজ যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ, প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল, এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি— নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *